একজন রমা চৌধুরী

Author

কালেরতরী

১৪ অক্টোবর , ২০২১ ( বৃহস্পতিবার ) ১১:২২

একজন রমা চৌধুরী -হোসনেয়ারা বেগম

আত্মপ্রত্যয়ী ইস্পাতকঠিন এক মহামানবী রমা চৌধুরী 

যুদ্ধের সময় দেশীয় কিছু নরপশুর সহায়তায়

পশ্চিমা হায়েনাদের কাছে হারিয়েছেন সবই।

 নিজের সম্ভ্রম,যৌবন অকাতরে বিলিয়ে,

জীবন তৃষ্ণায় ক্লান্তিতে লেপটে ছিলেন

এ মাটিতে  মায়ার বাঁধনে।

পুকুরে ডুব দিয়ে বাঁচিয়েছিলেন প্রাণ

মৃত্যুকে অতিক্রম করে রাখেন দেশের মান,

তবু বেদনার অশ্রু ঝড়ান নি জীবনের অনুতাপে

কালো ছাঁয়া করে নাই আঘাত যবে,

তবু  যেনো তার বেঁচে থাকা ছিলো অপরাধ 

 আপনজনের কাছে শুনেছেন বহু

কুৎসিত অপবাদ।

প্রজ্জ্বলিত অগ্নি প্রদীপ যবে ডুবু ডুবু কালনিদ্রায়

হায়েনারা জ্বালিয়ে আগুন পাঠাতে চায় চিতায়,

প্রচান্ড আত্ম অহামিকায় উঠে দাড়ায় দিয়ে ঝংকার

এ যেন এক মমতাময়ী মা মোদের অহংকার।

এই আলোক বর্তিকার জন্ম চট্টগ্রামের পোপাদিয়া গ্রাম

 ঢাকা ভার্সিটিতে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি তার সুনাম, 

তার পেশা ও নেশা ছিলো শিক্ষার আলো দান,

কক্সবাজারসহ বিভিন্ন বালিকা বিদ্যালয়ে 

করেন সে দায়িত্ব পালন।

এই যুদ্ধ জননী নেন নি কোনো বিরঙ্গনা সন্মান

গভীর দেশপ্রেমি ছিল তার আত্মসন্মান,

প্রধানমন্ত্রীর বার্তাকে তিনি করেছেন স্ব-সম্মানে বর্জন, 

স্বহাস্যে বলেছেন, তোলা থাক না এ নিয়মের বিধান 

ভগবানের জমিনে কেটে যাবে মোর একটা প্রাণ।

বুকের গহীন গহ্বরে ছিলো কতোটা ক্ষতের নিদর্শন, 

এদেশের জন্য সম্ভ্রম দিয়েছি, স্বামী,

সন্তান দিয়েছি আর কি আছে বাকী বলুন,

এ দেশ যে আমার ধ্যান জ্ঞান এটাই হয়ে থাক

আমার পূর্ণ অর্জন।

এই মহীয়সী নারী যুদ্ধের পর রৌদ্রতপ্ত পিচঢালা পথে

হেটেছেন খালি পদে 

যে মাটিতে মিশে আছে আমার সন্তানেরা

কি করে হাটেন জুতা পায়ে?

নিজে বই লিখে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করে 

চালাতেন জীবিকা,

দৃঢ় বিশ্বাসে বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজের আত্ম-অহমিকা।

এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি এমনই মহান

 হাজারও মায়ের সম্ভ্রম হারনোর প্রেরণা হয়ে

টিকে আছে গর্ভ, আছে সন্মান।

এই মাটিতেই মিশে আছেন সেই যুদ্ধমাতা

তাই এখানে ঘুমাতে কষ্ট হবে না, হবে না ব্যকুলতা।

জীবন যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত,

রক্তাক্ত হয়েও মনোবল হারান নি যিনি

বৈশাখী ঝড়ে নুয়ে পড়ে আবার উঠেছেন জাগি

উদ্দাম বেগে,

সবুজ সতেজ নির্মল করতে চেয়েছেন

এ বাংলাকে ভালবেসে।

দোহাই তোমাদের তরে ওকে বলোনা বিরঙ্গনা

হ্নদয় থেকে বলোনা বঙ্গমাতা মৃত্যুর পরেই না হয় পাক এই সন্মাননা।

আর্কাইভ