খোকা ফিরবে ঠিক ফিরবে
খোকা ফিরবে ঠিক ফিরবে
-হোসনেয়ারা বেগম
ঘরের দাওয়ায় বসে
ক্লান্ত মা খোকার অপেক্ষায়
আজ খোকার পচ্ছন্দের কলার মোছার ঘন্ট
আর চিংড়ি ইচোড়
করেছেন মা,
একটু অপেক্ষা কর
মা আসছি আমি
মা ডাকছে খোকা,
আয় বাবা তাড়াতাড়ি।
ক্লান্ত মা ছুটছে
খোকার সন্ধানে
বিরক্ত মা,
কী দস্যু ছেলেরে বাবা
আর পারছিনা এ-ও
কি সয় প্রাণে,
ভাত চেয়ে কেউ
এভাবে লুকায় গিয়ে?
অবুঝ মা যাকে
দেখে তাকে জিজ্ঞেস করে
আমার খোকা কোথায়
দেখেছ কি তারে?
অবশেষে মা গেল
ফসলের মাঠে
ফসল কাটার মোসুম
এসেছে,
সোনালী ধান নুয়ে
পড়ছে মাটিতে
খোকা এখনো আসেনি
বাড়িতে,
তোমারা আমার
খোকাকে ডাকছ না কেন
ধান কাটার সাড়িতে?
মা চলে আসে
শানবাধাঁনো পুকুর ঘাঁটে
এখানটাতেই আড্ডা
দিতো খোকা
শীতল হওয়ায় বসে,
শূন্য কেন খোকার
আসন
খোকা কোথায় তবে?
খোকার মাছ ধরার
ছিপটা পরে আছে হেথায়
ঘুড়ি নাটাই তাও পরে আছে সেথায়।
অবুঝ মা দাঁড়িয়ে
খোকার অপেক্ষায়
তার খোকা ফিরবে
ঠিক ফিরবে সন্ধ্যাবেলায়,
আচ্ছা করে বকুনি
দেব তবে
মাকে কেউ এভাবে অপেক্ষা করায়?
হাঠাৎ মা বিস্ময়ে
তাকায় পশ্চিমে
অস্তাচলগামী
সূর্যের প্রাণে,
সূর্য যেন আজ
রক্তে রঞ্জিত অস্তিম প্রহরে
মা বিষণ্ণ মনে তাকায় শিমুল পলাশ
আর কৃষ্ণচুড়ার
দ্বৈতরূপায়নে
সেথায়ও যেন
রক্তের ঝিলিক হানে।
মা এবার স্হির
চোখে তাকায় আকাশ পানে
কি ভয়ংকর বিভৎস
আস্ফালনে,
শকুনিরা উড়ুক্কু
আজ আকাশের সীমানায়
মা আঁতকে উঠে
কম্পন তুলে হ্নদয়ে
শকুনিরা যেন
হিংস্রতায় চায় কামড় বসাতে
লাল সবুজের
পতাকায়।
পুত্র শোকে
অন্ধত্ব বরণ কারে মা
আজও স্বপ্ন দেখে
তার খোকা ফিরবে
শ্বেত শুভ্র বসনে
শোণিত চাবুক হাতে
শৃংখলিত
মাতৃভূমিতে,
এবার হবে স্নায়ুর
যুদ্ধ ঝড়াবে বৈশাখী রুদ্র ঝড়
দুর হবে যতো
অন্যায় অবিচার
বীরভাগ্য
বসুন্ধরায় হবে নতুন সূর্যোদয়।