বরিশালে প্রতারণার নতুন ফাঁদ
কালেরতরী
২ ডিসেম্বর , ২০২১ ( বৃহস্পতিবার ) ১৪:৪৬চাকরি দেওয়ার নামে বরিশালে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আরএম গ্রুপ নামে একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে। তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছে অসংখ্য তরুণ-তরুণী, বাড়িওয়ালা থেকে শুরু করে রেন্ট-এ-কার ও নগরীর বিভিন্ন শোরুমের ব্যবসায়ীরা। এমনকি স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া দিয়েও তাদের টাকাও দেয়নি আরএম গ্রুপ। সবমিলে কোটি টাকার বেশি নিয়ে উধাও হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ বুধবার (০১ ডিসেম্বর) নগরীর রূপাতলী হাউজিংয়ের হিরন পয়েন্ট-২ ভবনের সাত তলায় চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, ৩ নভেম্বর স্থানীয় তিনটি দৈনিকে ম্যানেজারসহ আট পদে জনবল চেয়ে বিজ্ঞাপন দেয় আরএম গ্রুপ। বিজ্ঞাপনে সর্বনিম্ন নয় থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা বেতনের কথা উল্লেখ করা হয়। বেতনের অফার দেখে অনেকে আবেদন করেন। পরবর্তী সময়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত জামানত নেওয়া হয়। ওই টাকার বিপরীতে প্রত্যেককে কোম্পানির রসিদ দেওয়া হয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে বেশ কয়েকটি পণ্য সরবরাহের কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে আরএম গ্রুপের গ্যাস স্টোভ, আরএম এলপিজি গ্যাস, ডাব সাবান, শ্যাম্পু, ইমপেরিয়াল সাবান, নবরত্ন তেল, বিস্কুট, ২২ ধরনের চকলেট এবং বিদেশি কোমলপানীয় সামগ্রীসহ নানা পণ্য। এসব পণ্য বিক্রয়ের জন্য তারা এলাকার বহু তরুণ-তরুণীকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়।
বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর সাত তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় আরএম গ্রুপ। মাসিক ৩৬ হাজার টাকা ভাড়া এবং অগ্রিম হিসেবে এক লাখ টাকার একটি চেক দেওয়া হয়। কয়েকদিন আগে থেকে অফিসের যত মালামাল ছিল, তা কুরিয়ারে টাঙ্গাইলে পাঠানো শুরু করে তারা। ওই সময় জিজ্ঞাসা করলে নতুন ডেকোরেশন করার কথা বলেছে। তাদের ব্যবহার এবং অফিসের সাজসজ্জা দেখে মনে হয়নি প্রতারক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশালের পারটেক্স শোরুম থেকে ১০ লাখ টাকার ফার্নিচার, ওয়ালটনের শোরুম থেকে নয় লাখ ৩০ হাজার টাকা ইলেকট্রনিকস সামগ্রী নিয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মশার কয়েল কোম্পানির মালামাল নিয়েছে। কিন্তু কাউকে টাকা দেয়নি। সবাইকে চেক দেওয়া হয়েছিল। পরে চেক নিয়ে নির্ধারিত ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারে হিসাব নম্বরে ৩০০ টাকা আছে। এ ছাড়া রূপাতলী এলাকার একটি রেন্ট-এ-কার থেকে তিনটি গাড়ি মাসে ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নিয়েছিল। তাদের এক টাকাও দেওয়া হয়নি বলে জানান ভবন ম্যানেজার।
পারটেক্স ফার্নিচার বরিশালের শোরুমের স্বত্বাধিকারী বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, প্রতারক চক্রটি দুই দফায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়েছে। এর বিপরীতে চেক দিয়েছে, ব্যাংকে গিয়ে চেকের হিসাব নম্বরে টাকা পাইনি। এখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, প্রতারিত হওয়ার পর সবাই আইনের আশ্রয় নিতে এসেছেন। আগে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের অবহিত করলে চক্রটিকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হতো।