এবার সিলেটের মন্ত্রীদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা মেয়র আরিফুল হকের
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য এবার বর্তমান সরকারের সিলেট অঞ্চলের মন্ত্রীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে তিনি 'সিলেট মহানগরীর উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব' এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনকে 'সিলেটপ্রেমী ব্যক্তিত্ব' হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ ছাড়া বর্তমান সরকারে এই অঞ্চলের অন্যান্য মন্ত্রীকে তিনি 'সিলেটের উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ' বলে আখ্যায়িত করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীতে সিসিকের ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় মেয়র এসব মন্তব্য করেন।
তবে গত ৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগ সরকারকে 'গন্ডারের' সঙ্গে তুলনা করেন। সিলেটের উন্নয়ন প্রশ্নে প্রয়াত সাইফুর রহমানের প্রশংসা করার বিপরীতে বর্তমানে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ নিয়ে সিলেট আওয়ামী লীগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ফেসবুকে মেয়রের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। আরিফুলের বক্তব্যকে অসৌজন্যমূলক ও শিষ্টাচারবহির্ভূত উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় মহানগর আওয়ামী লীগ। মেয়রের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়।
২০১৩ সাল থেকে টানা দুই দফা মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফুল হক। ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের হলেও মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ (সদর-নগর) আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে মেয়রের সুসম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত।
বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় মেয়র আরিফুল বলেন, সাইফুর রহমান উন্নয়নের প্রশ্নে ছিলেন আপসহীন, দলমতের ঊর্ধ্বে। সেই আদর্শকে ধারণ করে রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে উন্নয়ন কাজে মনোনিবেশ করেছি। তিনি বলেন, নগরীর উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব সর্বজন শ্রদ্ধেয় রাজনীতিবিদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সিলেটপ্রেমী ব্যক্তিত্ব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেটের উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে সিলেটে বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু কমপ্লেপ নির্মাণের পথে একধাপ এগিয়ে গেছি। প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ২৫ তলা বিশিষ্ট এই কমার্শিয়াল হাবের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে সিলেট মহানগরীর ব্যবসা-বাণিজ্যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হবে।
বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়েল ট্রাস্টের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্পের প্রাথমিক অনুমোদন প্রদান করায় পুণ্যভূমির নাগরিকদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেয়র। তিনি জানান, এই কমপ্লেপে থাকবে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, বঙ্গবন্ধু প্লাজা, হেরিটেজ মার্কেট, কমার্শিয়াল হাব, শেখ রাসেল পার্ক, কনভেনশন সেন্টার, অডিটোরিয়াম, ফেয়ার প্লেসসহ নানাবিধ সুবিধা।